Reaction of Teachers to unfortunate remarks of Prime Minister Sheikh Hasina !


বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষদকের নিয়ে সাম্প্রতিক রাস্ট্রীয় অনাকাঙ্খিত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন

ঐতিহাসিক কাল থেকেই এদেশে শিক্ষকরা মর্যাদার আসনে উপবিষ্ট।
সারা দুনিয়াতেও তাই।শিক্ষকদের মর্যাদা কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা। একদল অবিমৃষ্যকারী চেষ্টা করছে।সফল হবেনা।ওরা ঘৃন্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পাঁচ মাস যাবত মর্যাদার জন্য লড়াই করছে।এ লড়াই চলবে।এটা বেতন-ভাতা বৃদ্ধির আন্দোলন নয়।উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।এ আন্দোলনের সাথে আছে পাঁচ কোটি শিক্ষা পরিবার ও দেশের ১৬ কোটি মানুষ।ওদের সমর্থন ও ভালোবাসায় আমরা সিক্ত।বন্ধুরা মন খারাপ করবেনা।এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে।জয় আমাদের সুনিশ্চিত।আন্দোলন চলবে।জাতির সামনে ষড.যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচিত।
Kazi Khasrul Alam Quddusi
অধ্যাপক, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি
একটা চাকুরী চাই: ছাত্র হিসেবে তেমন খারাপ ছিলাম না। লোকপ্রশাসন ছাড়া আইনের ছোট একটা ডিগ্রী আছে। শিক্ষক হিসেবে কেমন, আমার ছাত্ররাই ভাল জানে। মোটামুটি বলতে পারি, কিছু ইংরেজি লিখতে পারি, একটা চাকুরী দিবেন, কেবল একটা চাকুরী। আশাকরি, হতাশ করব না..........

অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

" চাকরী টা আমি ছেড়ে দেবো, 'বেলা', শুনছো "
কামরুল হাসান, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আজকের সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকদের নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বললেন এবং যে টোনে বললেন তাতে খুব খুবই অপমানিত বোধ করছি। অন্তত আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে কখনো এত অপমানিতবোধ করিনি। আপনার স্বভাবসুলভ witty মন দিয়ে মন প্রাণ ভরে অপমানিত করেছেন। আমি আমার জীবনে আমার কোন ছাত্রকে আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য অনুরোধ করব না। বলব না যে, তোমাদের দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। বলব, ভাগ, তারাতরি ভাগ। এদেশের রাজনীতিবিদরা যেমন তাদের সন্তানদের ভাগাচ্ছেন আমরাও এখন থেকে আমাদের সন্তান এবং সন্তানতুল্য ছাত্রদের বলব ভাগ।
১. শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা বৃদ্ধির আন্দোলন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন,
‘আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবে কেন? আমার এখানে হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই। ৯১ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছি। কেউ কি কখনো কল্পনা করেছে, এই শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করেন। কখনো কেউ চিন্তা করেছে?'
আমার উত্তর: বাড়িয়েছেন কিন্তু কিন্তু যার যে অবস্থান ছিল সেগুলোকে উলটপালট করে। বেতন স্কেলের দিক থেকে সচিব্ এবং শিক্ষকরা আগে সমান ছিল কিন্তু অন্যান্য আর্থিক সুবিধার দিক থেকে নয়। তবুও কিন্তু কখনই কিছু বলিনি। এবার যে শুধু সুবিধা নয় সাথে সাথে সম্মানিও টান দিয়েছেন। এটাতো সহ্য করা যায় না।
২. উনি আরো বলেন, 'আমি মনে হয়, একটু বেশি দিয়ে ফেলেছি। কমিয়ে দেওয়াই বোধ হয় ভালো ছিল।’
আমার উত্তর: প্রচন্ড অপমানিত বোধ করছি। আপনার এই কথার উত্তরে শুধু এইটুকুই বলব।
৩. প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের চাকরির বয়স ৬৫ বছর আর সরকারি চাকরিজীবীদের বয়স ৫৯ বছর। এগুলো তো বিবেচনায় নিতে হবে।
আজকে যেটা নিয়ে আলোচনা করছে, সেটা নিয়ে আমারই তো প্রস্তাব ছিল। পিএসসির একটা আলাদা ইউনিট করে আমরা চাচ্ছিলাম... কিন্তু ওনারা আন্দোলন করছেন। তার মানে যে বেতন বাড়িয়েছি, নিশ্চয় তাঁরা বর্ধিত বেতন গ্রহণ করবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত সমাধান না হয়।’
আমার উত্তর: আপনি শুধু শেষের দিকটা দেখলেন শুরুটা দেখলেন না? আপনি কি জানেন বিস্বদিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কখন চাকুরী শুরু করেন? অনেকেই পিএইচডি বা পোস্ট-ডক করে বা তারও পরে শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। 
Yes মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা কেউ বর্ধিত বেতনের এককড়িও নিব না।
৪. শিক্ষকদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওনারা সচিবদের সঙ্গে তুলনা করছেন। আচ্ছা সচিবরা কী কী সুবিধা পাচ্ছেন আর ওনারা কী কী ভোগ করছেন
তার একটা তুলনামূলক চিত্র লেখেন না। কোনো সচিব কিন্তু অন্য কোথাও চাকরি করতে পারেন না। সেটা জানেন ভালো করে। কিন্তু আমাদের শিক্ষকেরা পারেন।
কোন ইউনিভার্সিটির কত শিক্ষক কোন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে চাকরি করেন সে হিসাব কিন্তু আমার কাছে আছে।’
আমার উত্তর: সত্যি জানতে চান? তবে শুনুন যুগ্মসচিব বা সচিবরা শুধু গাড়ির maintenance-এর জন্য ন্যুনতম ৪৫০০০ টাকা মাসিক পান। তাছাড়া অন্যান্য সুবিধার কথা নাহয় নাই বললাম। বিভিন্ন প্রজেক্ট থেকে নয় ছয় এবং স্পিড মানি যা অর্থমন্ত্রীর মতে সম্পুর্ন হালাল টাকাতো আছেই। তাছাড়া একেক জন সচিবের কি পরিমাণ বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি-জমা, গাড়ি, আসবাবপত্র, নাম-বে-নামে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শেয়ারে বিনিয়োগ ও ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স আছে সেটার হিসাব কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কেউ দিয়েছে? অন্যপক্ষে কিছু কিছু বিভাগের মুষ্টিমেয় শিক্ষক হয়ত পার্ট টাইম ক্লাশ নেন বা কনসালটেন্সি করেন, এটা খুবই হাতে গোনা। বাকীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনের উপরই নির্ভরশীল। এছাড়া, শিক্ষকরাতো কষ্ট করে দুটো পয়সা অতিরিক্ত উপার্জন করি একান্ত বাধ্য হয়ে। তাও নগন্য সংখ্যক। এই নগন্যদের দায় ভার আপনি অধিকাংশের উপর চাপিয়ে দিলেন? আপনি হয়ত জানেন না যারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান উনারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে permission নিয়ে বৈধভাবে এই দেশেরই সন্তানদের পড়ান।
৫. শিক্ষকদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কথা নাই বার্তা নাই ওনারা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দেবেন। কেন পড়াশোনা বন্ধ করবেন?
শিক্ষকরা আন্দোলন করতে যাবেন, কীসের জন্য? আর যদি করতে হয়, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার রাইট তো তাঁদের নাই। এই ছেলেমেয়েদের কী অবস্থা হবে! কতগুলি ক্লাস নষ্ট হচ্ছে। ক্লাসগুলি তো তাদের ঠিকমতো নিতে হবে। আর আমরা যেটা নিজেরাই চিন্তা-ভাবনা করছি, এটা নিয়ে তাদের আন্দোলন করার দরকার ছিল না। আন্দোলন যখন করছে, করতে থাকুক। এখানে আমার হস্তক্ষেপের কিছু নেই।’
আমার উত্তর: আমারাতো এর কিছুই করতে চাই না। উদাহরণ দিনতো আপনাদের কাছ থেকে জিম্মি করে আন্দোলন না করে কেউ কিছু পেয়েছেন কিনা। আপনারাতো সংস্কৃতিটাই চালু করেননি। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কোন ক্লাস বর্জন না করে বা কোন কিছু জিম্মি না করেইতো আন্দোলন করছিলাম। এখন পর্যন্ত অপমান, হুমকি ধামকি আর দাম্ভিকটাই দেখিয়ে যাচ্ছেন আর আমাদের বাধ্য করছেন ক্লাস পরীক্ষা বর্জনে যেতে।
প্রফেসর, খুলনা প্রকৌশন ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
আজকের প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর দেশের সবকয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্বাচিত প্রতিনিধি শিক্ষক ফেডারেশন এর ভূমিকা কি? ভুল তথ্য-নির্ভর বক্তৃতার জন্য নয়, তাচ্ছিল্যময় বাগভঙ্গিমার জন্যও হতভম্ব! এত অসম্মান শিক্ষকদের প্রতি? এত? ভাবা যায় না। অথচ, আমরা তাঁকে আশ্রয়স্থল বিবেচনা করি। আজ অনেক বেশি হতাশ, মর্মাহত এবং লজ্জিত, যা প্রকাশের সঠিক কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমি দুঃখিত, মর্মাহত ও লজ্জিত। দেখলেন কি ভাষায়, কি টোনে আমাদের বিষোদগার করেছেন! প্রচন্ড অপমানিত বোধ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তব্যের পর আমাদের একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে। সুযোগ এসেছে আপনাদের সামনে সঠিক নের্তৃত্ব প্রদানের মধ্য দিয়ে শিক্ষক সমাজে আজীবন স্মরনীয় হয়ে থাকার অথবা ভীতু, স্বার্থপর ও দলকানা ভূমিকার কারনে ভিলেন হবার। শিক্ষক অবনমনের এই দিনে শিক্ষক নামের নিরীহ ও গোবেচারা জাতি ব্যাকুল আগ্রহে আপনাদের জ্ঞানগর্ভ মূলা-বাণী শোনার অপেক্ষায় রাত্রি যাপন করছে!!!!


সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ভাবছি বাংলাদেশে শিক্ষকতার চাকরী ছেড়ে ভূটান বা আফ্রিকার কোন জংগল দেশে চাকরী নেবো, যেখানে শিক্ষকগনের মিনিমাম মান সম্মান থাকবে... খুব হতাশ আমি এবং আমরা... নিজেকে আজ লাট সাহেবের কুকুরের এক ঠ্যাং মনে হচ্ছে।

আজ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগনের আন্দোলন নিয়ে উনার মনোভাব মারাত্বক ভাবে আমাকে ব্যাথিত করেছে। বিস্তারিত হয়ত পত্রিকায় আসবে।কিন্তু আমি আর লিখতে পারছি না।


Main Uddin Jewel
মাঈন উদ্দিন জুয়েল, সহযোগী অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যে তুলনামূলক চিত্র চেয়েছেন সে সম্পর্কে কয়েকটা পয়েন্ট লিখছি।
১. একজন সচিব পাজেরো, প্রাডোর মত কোটি টাকা মুল্যের বিলাসবহুল তিনটি সার্বক্ষণিক গাড়ী পান। এ গাড়ীগুলো সচিব, তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর সন্তানরাও ব্যবহার করে। এ গাড়ীগুলোর পিছনে প্রতি মাসে লক্ষ টাকার উপরে খরচ হয়। এ ছাড়া বর্তমানে যুগ্ম-সচিব ও ততোর্ধ্ব কর্মকর্তারা গাড়ি ক্রয়ের জন্য ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত সরকারী কোষাগার থেকে ঋণ নিতে পারেন। এর পাশাপাশি ওই গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও গাড়ি চালকের খরচ বাবদ প্রতিমাসে ৪৫ হাজার টাকা করে পান। গাড়ি ক্রয়ের ঋণ উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চলেন পাবলিক বাসে, রিক্সায়।
২. ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের প্রমোশন হয় মান্দাতার আদলে, বিসিএস পরীক্ষার মেধাক্রম অনুসারে। সেখানে চাকুরীতে যোগদানের পরের প্রশিক্ষণ, উচ্চতর ডিগ্রীর কোন প্রয়োজন হয়না। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রমোশনের প্রধান শর্ত হল গবেষণা, প্রকাশনা ও উচ্চতর ডিগ্রী। উচ্চতর ডিগ্রীর প্রয়োজন না থাকলেও ক্যাডারদের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে উচ্চ শিক্ষা খাতে বিরাট অংকের টাকা বরাদ্ধ থাকে। কোন কর্মকর্তা বিদেশে এডমিশন নিতে পারলে সে ফান্ড থেকে অর্থায়ন করা হয়। তাছাড়া রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আসা উচ্চ শিক্ষার সকল স্কলারশিপ আমলারা ভোগ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
৩. সচিবসহ ক্যাডার কর্মকর্তারা যে প্রটোকল ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ভোগ করেন তাতে মনে হয় তারা স্বর্গীয় সন্তান আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আম জনতা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
৪. সচিবরা যে বিলাসবহুল বাড়ীতে থাকেন তার মাসিক ভাড়া ৫০/৬০ হাজার টাকার কম নয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশীর ভাগ শিক্ষক ভাড়া বাসায় থাকেন।
৫. সরকারী আবাসিক প্রকল্পসমূহে প্লট, ফ্লাট ও গৃহ ঋণের প্রায় সবটাই তারা ভোগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এগুলো থেকে বঞ্চিত হন।
৬. ক্যাডারভুক্ত সরকারী কর্মকর্তারা অফিসিয়াল (নীল) পাসপোর্ট পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ সুবিধা পান না। অফিসিয়াল পাসপোর্টের অধিকারী ব্যক্তির সার্কভুক্ত দেশসহ ৩২টি দেশে যাওয়ার জন্য কোন ভিসার প্রয়োজন হয় না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হল দেশী বিদেশী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন মিটিং, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করা, সে জ্ঞান শ্রেণীকক্ষে বিতরণ করা।কিন্তু পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জাতীয় এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।
৭. একজন সচিব চাকুরী জীবনে রাষ্ট্রীয় খরচে অসংখ্যবার বিদেশে যেতে পারেন যার বেশীর ভাগই প্রমোদ ভ্রমণ মাত্র। এসব বিদেশ ভ্রমণ রাষ্ট্রের পরিকল্পনা প্রণয়নে কোন কাজে আসে বলে আমাদের জানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এরকম কোন সুবিধা কখনো পান না।
৮. দৈবচয়নের ভিত্তিতে কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও অধ্যাপকের অবস্থান দেখলে দেখা যাবে সমাজে কে কতটা আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদার দিক দিয়ে প্রতিষ্ঠিত।
৯. যে কোন দেশে সরকারী চাকুরীজীবীদের বয়স নির্ধারিত হয় সে দেশের মানুষের গড় আয়ুর ভিত্তিতে। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭০ বছর। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বয়সসীমার কথা না ভেবে সব সরকারী চাকুরীরীজীবীদের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
১০. রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকগণ, একটু শুনে দেখুন শুধু বিদ্যালয়ের শিক্ষক নয় প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া বাকী ২৬ টি ক্যাডার কেমন আছে, তারা বর্তমান বেতন কাঠামোতে কীভাবে বঞ্চিত হয়েছে, চাকুরী বিধির কারণে মতামত প্রকাশ না করতে পেরে তারা কতটা অনাগ্রহের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
১১. ভেবে দেখুন, সবাইকে অসন্তুষ্ট করে শুধু প্রশাসন ক্যাডারের ষড়যন্ত্রে পা দেয়া রাষ্ট্র্বের জন্য কতটা মঙ্গল বয়ে আনবে।
১২. পিএসসিতে বিসিএস পরীক্ষার মেধা তালিকা পরীক্ষা করে দেখুন মেধা তালিকার কোন কোন প্রার্থীরা প্রশাসন ক্যাডারে চাকুরী করতে আসতেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় আর সচিবালয় প্রকৃতিগতভাবে আলাদা দু'টি জায়গা। সচিবদের সাথে আমাদের তুলনা হওয়ার কারণ আমাদের রাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দিয়ে রেখেছ সচিবদের হাতে। সেই সুযোগে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে বঞ্চিত করতে করতে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দিয়েছে। ছাত্রজীবনে প্রতিটা বিভাগের সেরা ছাত্ররাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় আসেন। তাই আমরা আমাদের মর্যাদা নিয়ে আলাদা থাকার জন্য আলদা পে স্কেল এবং উচ্চ শিক্ষা কমিশন চাই যাতে এটাই আমলাদের সাথে আমাদের শেষ দ্বন্দ্ব হয়।
সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

খুব ভোরে স্বপ্নটা দেখলাম। বেশ অদ্ভুত!
এই আমার দেখা হয়েছে, ১০ বছর বয়সী আমি'র সাথে। শান্ত, কিছুটা বিচ্ছিন্ন, একা আর নিজের ভুবনে প্রায় নিমগ্ন সেই ছোট্ট আমিটার সাথে।
বাসার পেছনের বারান্দা দিয়ে ছোট্ট আমি তাকিয়ে দেখছি বাইরের কাশবন আর তার উপরে বিরাট নীল আকাশ। হয়তো একটু আগেই আকাশ দিয়ে একটা বিমান উড়ে গেল। খুব পাইলট হতে চাইতাম তখন।
এমন সময় আজকের বড় আমিটা গিয়ে হাজির; নিজের ছোট্টটাকে দেখে কিছুটা আনন্দ আর কিছুটা বিস্ময় নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি করছ?
আকাশ দেখি।
, জানতে চাইল, তুমি কি করো?
বললাম, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই।
বলল, 'তুমি খুব বোকা' ছোট মানুষটার মুখে হাসি। মনে হলো কিছুটা satire ওর চোখে মুখে।
ঘুম ভেঙে গেল। ফজরের আজান শুনতে শুনতে আমি ভাবছিলাম, ভোরের স্বপ্নটি কতো নিষ্ঠুর সত্য বলে গেল!!

শিক্ষকরা বোকাই হয়। অথবা, বোকারাই শিক্ষক হয়।
Enamul Hoque Bhuiyan
এনামুল হক ভূইয়া, সহকারী অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকার শিক্ষকদের আলদা বেতন স্কেল দেবার জন্য অর্থের উৎস খুঁজে পাচ্ছে না। বেতনের উৎস সমূহ হতে পারে নিম্নরূপঃ
১। কবীর চৌধুরী স্যার প্রণীত শিক্ষানীতিতে বলা আছে যে, চার বছর মেয়াদী অনার্সকে সমাপণী ডিগ্রী বিবেচনা করা হবে। কেবল শিক্ষকতা ও গবেষণার জন্য মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রী আবশ্যক। এতে করে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর অকারণে মাস্টার্স করার ফলে সরকারের যে ব্যয় হচ্ছে তা থেকে শিক্ষকদের বেতনের বর্ধিত অংশ আসতে পারে। এক বছরের মাস্টার্সের জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা দুই বছর ব্যয় করে, হলে থাকে, বাবা-মায়ের অর্থ ব্যয় করে, চাকুরীতে দু’বছর পিছিয়ে যায়, এমনকি সংসার জীবনেও পিছিয়ে যায়। যা নিতান্তই আপ্রয়োজনীয় খরচ। শিক্ষাকতা ও গবেষণা ব্যতিত খুব কম চাকুরী আছে যাতে উচ্চ শিক্ষিতের দরকার আছে। বিশেষ করে অধিকাংশ সরকারী চাকুরীতে ইন্টারমেডিয়েট পাশের পর প্রফেশনাল ট্রেনিং দেয়াই যথেষ্ট নয় কি?
২। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথাকথিত ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। এতে করে টেন্ডারবাজী বন্ধ হবে। টেন্ডারবাজীর ফলে সরকারের যে অপচয় হয় তা থেকে শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন দেয়া সম্ভব। তাছাড়া তথাকথিত ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে সেশনজট কমে আসবে। সেশনজটের ফলে যে বিরাট অপচয় হয় তা থেকে শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন দেয়া সম্ভব।
৩। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে হরতালের আওতামুক্ত রাখতে হবে। হরতালের কারনে যে সেশনজট হয় তাতে সরকারের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অপচয় হয় তা থেকে শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন দেয়া সম্ভব।
৪। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ডোনেশন প্রথা চালু করা যেতে পারে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বাড়বে। উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদদের ছেলেমেয়েরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে বা পডার জন্য উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।
৫। বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম বা কনফারেন্স হল গুলোর আধুনিকায়ন করে সেগুলো প্রাইভেটে ভাড়া দেয়া যেতে পারে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বাড়বে।
৬। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে মার্কেট বা ইন্ডাস্ট্রি গুলোর যোগাযোগ বাড়াতে হবে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বাড়বে।
৭। সরকারের ভূমি মন্ত্রাণালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বা রাজউক যে কোন একটিতে প্রতিবছর যে ঘুষ লেনদেন হয় তার যে কোন একটি বন্ধ করতে পারলে শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন দেয়া সম্ভব।
৮। ভুরি ভুরি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় না করে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ইভেনিং শিফট চালু করা যেতে পারে। এতে অবশ্য কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন রাজনীতিবিদদের ও ব্যবসায়ীদের ব্যবসা মন্দা হয়ে যাবে। আর সরকারী কর্মকর্তাদের মুফতে পাওয়া ডিগ্রী বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বাড়বে।
৯। কেবলমাত্র যেকোন একটি বিমান বন্দর বা সমুদ্র বন্দরে প্রতিবছর যে পরিমান শুল্ক ফাঁকি দেয়া হয় তা বন্ধ করা যায়, তা থেকে শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন দেয়া সম্ভব।
১০। বাংলাদেশ বিমানে ক্রয় বাবদ যে দূর্নীতি হয় তা বন্ধ করা গেলে, শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন দেয়া সম্ভব।
১১। যে কোন একটি সিটি কর্পোরেশনে যে ঘুষ লেনদেন হয় বা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আপ্যায়ণ বাবদ যে অপচয় হয় তা থেকে শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন দেয়া সম্ভব।
১২। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর যে পরিমান অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে, বিওআইপি ও হোন্ডির কারণে সরকার যে রাজস্ব হারাচ্ছে তার যে কোন একটি বন্ধ করতে পারলে শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন দেয়া সম্ভব।
এভাবে হাজারো উৎস দেখানো যাবে। শিক্ষকেরা দুর্নীতি করেন না বা করার সুযোগ নাই তাই তার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ায় বা কনসালটেন্সী করে তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অপরাধ। কিন্তু ঘুষখোররা রাষ্ট্রের কোটি-কোটি টাকা নষ্ট করেছেন বা দেশের বাহিরে পাচার করছেন প্রধানমন্ত্রী কি তাদেরই পক্ষ নিচ্ছেন?
আর মর্যাদা! শিক্ষকদের নাকি সবাই সম্মান করেন। শিক্ষা সচিব তো উনার প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকে পা ছুঁয়ে সালাম করেন। তাহলে শিক্ষকদের মর্যাদার প্রশ্নে কারো দ্বিমত নেই। তবে রাষ্ট্রীয় ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে অধ্যাপকদের সচিবের উপরে রাখতে কোন সমস্যা দেখছি না। কারণ সচিবেরাও তাই চান। তাহলে সরকারের অসুবিধা কোথায়?

সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আপনি আপনার তথ্যসংকটময় মন্তব্য দ্বারা জাতীর সবচাইতে মেধাবী সন্তানদের অপমান করেছেন, মনে কষ্ট দিয়েছেন, কাঁদিয়েছেন।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আপনার মন্তব্যের দ্বারা এদেশে শিক্ষকতায় মেধাবীদের আগমন চরমভাবে নিরুতসাহিত করেছেন, জ্ঞান ভিক্তিক সমাজ বিনির্মান করে এ জাতীকে, এ জাতীর উন্নত ভবিষ্যত কে সুসংহত করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন বিমুখ একটি ভুল পদক্ষেপের ইঙ্গিত করেছেন।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আপনি বুঝতে পারছেন না...আপনার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা টাকার কথা বলছে না, টাকার জন্য মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতায় আসে না, টাকা দিয়ে আপনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মুল্যায়ন করতে পারবেন না।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আপনাকে বুঝতে হবে...অাপনার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর অবস্থা করুন ও পশ্চাতমুখী, শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষকের পেশাগত উতকর্ষ সাধন, শিক্ষকের প্রশিক্ষন ও দক্ষতা উন্নয়ন, গবেষনার বরাদ্ধ ও গবেষনার মানোন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও পদক্ষেপের এর অবস্থা করুন।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আপনাকে বুঝতে হবে..আমাদের এই দরিদ্র ও ক্ষুদ্র ব-দ্বীপের আর কোন সম্পদ নাই, একমাত্র মানব সম্পদেই আমাদের প্রাচুর্যতা আছে। সুদক্ষ মানবসম্পদ ও উচ্চজ্ঞান সমৃদ্ধ সমাজ নির্মান করে আগামী দিনের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বৈশ্যিক চ্যালেন্জ মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ‍গুলিই গুরু দায়িত্ব পালন করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর প্রভুত উন্নয়ন ও যুগোপযোগী করতেই হবে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা ও গবেষনা চাকরিটিকে সম্মানজনক করে (টাকাজনক করা এসেনশিয়াল না) সর্বোচ্চ মেধাবীদের এ পেশায় এসে উন্নত জাতী গঠনে মনোনিবেশ করাতেই হবে।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আপনার একদিনের একটি ভূল কথা এক নিমিষে আপনার দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগে সৃষ্টি করা জনমনের গহীনে পালিত সম্মানের জায়গা থেকে ছিটকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এক লহমায় আপনার প্রতি সাধারন (অরাজনৈতিক ও রাজনৈতিক সুবিধা ভোগী নয় এমন) মানুষের শ্রদ্ধা ও ভরসার জায়গাটি নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহী হিসেবে তথ্যের ঘাটটি থাকার মত অবাক করা ব্যাপারটি জনসমখ্খে আপনাকে ছোট করার উপক্রম হয়েছে।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আপনার বুঝতে হবে..প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মচারী, সকল কর্মকর্তা, বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকবৃন্দ, ২৬টি জনবহুল ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপুর্ন কাজে নিয়োজিত নিবেদিত প্রান ক্যাডারদের মনোবেদনা মনোবন্চনা আপনি গুটিকয়েক সুবিধাবাদি লোভী কুচক্রী আমলার (দেশপ্রেমি ও সমঝদারদের কথা বলছি না) পচা কথায় পায়ে ঢেলে দিলে আপনার ই সবচাইতে বেশি ক্ষতি।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আপনার সরকারের উন্নয়ন ভাবনা, উন্নয়ন কর্মকান্ড, সাফল্য (অকল্পিনয় বেতন বৃদ্ধির সাফল্যও)-এর ক্রেডিট থেকে আপনাকে বন্চিত করার ষড়যন্ত্র করছে কারা এবং কেন।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আপনাকে বুঝতে হবে...ভূল তথ্য দিয়ে ভুল কথা বলিয়ে লক্ষ লক্ষ বন্চিত পেশাজীবির কাছে আপনাকে ছোট ও নির্বোধে রুপান্তর করার মত ঘৃন্য কাজটি করেছে কারা এবং কেন।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আমরা বিশ্বাস করি..আপনি ভরসার স্থল, আপনার ভূল ভাঙ্গবে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তথা সমগ্র বন্চিত পেশাজীবির কথা আপনি শুনবেন, সকল তথ্য আপনার হাতে আসবে, আপনি যাচাই করবেন, আপনার হাত ধরেই আসবে সকল বৈষম্যের অবসান, সকল সমৃদ্ধি।
...
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী..
আমরা বিশ্বাস করি..আপনার সুযোগ্য ও সময়োপযোগী পদক্ষেপেই উজ্জিবিত হবে, অনুপ্রানিত হবে, উতসাহিত হবে এবং দেশের অগ্রগতিতে নিবিষ্ট মনে কাজ করে যাবে সকল স্তরের সকল পেশাজীবি।
Zakia Sultana Mukta
প্রভাষক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ

‘শিক্ষকদের ক্ষমতায়ন: টেকসই সমাজ গঠন’।
গত দুই দশক ধরে জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর উদ্যোগে পালিত হয়ে আসছে “বিশ্ব শিক্ষক দিবস”। এ বছরের শ্লোগান হিসেবে উক্ত ধারণাটিকে ওনারা এই দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় বলে নির্ধারণ করেছেন। যা বিশ্বের সব দেশই পালন করবে, এই ধারণাকে সমুন্নত, উৎকর্ষিত করতে বহুবিদ কার্যক্রম নিবে এবং তা বাস্তবায়নেও তারা উদ্যোগী হবে। কিন্তু, কিন্তু...
এটা আমাদের দেশের বেলায় একেবারেই প্রযোজ্য নয়, অন্তত গতকালকে আমাদের দেশের প্রধান নির্বাহীর বক্তব্যে শিক্ষক সমাজের প্রতি তাচ্ছিল্যের পর; এটা এখন আর নতুন করে ব্যাখ্যা করে বলার অপেক্ষা রাখে না!
আমি সামান্য-নগণ্য শিক্ষক মাত্র, আমার তেমন কিছুই বলার নেই আসলে! তারপরেও দীর্ঘশ্বাসটা বুক চিড়ে বেড়িয়ে আসে তখনই~ 
যখন দেখি সেই বক্তব্যটা দিয়েছেন আপনি,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী!
বঙ্গবন্ধুকন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনা!!
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী,
এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে যেকোন ধরনের ধনাত্মক পটপরিবর্তনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এদেশের সাংস্কৃতিক কর্মীদের সতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ব্যাপকারে ছিল এবং তা জনগণকে সাথে নিয়েই; যে জনগণকে নিয়েই আপনাদের কাজ! কিন্তু একবারও কি কখনো দেখেছেন~
কোন সচিব দেশের ক্রান্তিলগ্নে জাতির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে? আমার জানা নেই, অবশ্য আমার জানায় খামতি থাকতেই পারে; ভুল হলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী! বরং ইতিহাস থেকে আমরা এটাই জেনে এসেছি~ এই দেশের প্রশাসন দূর্নীতিবাজ এবং তা এতটাই যে আমাদের এক্ষেত্রে বেশ কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ারও রেকর্ড আছে! আমাদের আন্দোলন বেতন বাড়ানো-কমানো নিয়ে কখনোই ছিল না! আমরা আমাদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ স্বতন্ত্র বেতনস্কেলের দাবী করেছি! বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে সচিবরা কেন, কোন পেশাজীবীরই তুলনা চলে না! যার যার অবস্থান তার তার কাছে! 
কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতার বিচারে এবং নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার যোগ্যতার নিরীক্ষে অন্যান্য পেশাজীবীদের চাইতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার ক্ষেত্রে অধিকতর যোগ্যতা সবসময়ই চাওয়া হয়ে থাকে আর সেই দাবী পূর্ণ করার যোগ্যতা থাকলেই কেউ এই শিক্ষকসমাজের অন্তর্ভূক্ত হতে পারে; তাই জন্য শিক্ষকসমাজ নিজেদের অন্যদের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই যোগ্যতর বলে দাবী করেছে! এতে অন্যায়তো কিছু নেই!
যোগ্যতার বিচারে প্রথম থেকেই যারা পিছিয়ে আছে, তাদের এমন কোন গায়েবী যোগ্যতার ভিত্তিতে অধিকতর মর্যাদার আসনে আসীন করার প্রস্তাব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হলো; সেই প্রক্রিয়ার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবী করা আর নিজেদের অবস্থান নামিয়ে তাদের উচ্চতায় নিজেদের সুযোগ-সুবিধা দাবী করা এক বিষয় নয়!
শিক্ষকরা সেই গায়েবী আসমানী যোগ্যতার এবং তদানুযায়ী মর্যাদাপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের গোপন রহস্য উন্মোচনের দাবী করেছে মাত্র এবং এই দাবী প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভূক্ত ক্যাডার ব্যতীত সরকারী অন্যান্য সকল ক্যাডারে অন্তর্ভূক্ত ক্যাডারদেরও; কেবল শিক্ষা ক্যাডার কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাই এই দাবী তুলছে না।
মর্যাদাহানির এই মহোৎসবে ৯১% বেতন বৃদ্ধি হলেই কি আর ২০০% বেতন বৃদ্ধি হলেই কি!
বেতন বৃদ্ধি করা হলে সে বৃদ্ধি সবার বেলাতেই ঘটছে, কেবল শিক্ষকদের বেলায় তা ঘটেনি। আর এই বৃদ্ধিতে অন্যান্যদের মতন শিক্ষকেরাও খুশিই হতেন, যদি এতে শিক্ষকদের চরম অবমাননাকর অবস্থান নিশ্চিত না করা হতো!
সে যাই হোক~
তুলনায় যেতে চাইনি জন্যই আমরা স্বতন্ত্র বেতনস্কেলের দাবী করেছি! উচ্চমানের শিক্ষাকমিশনের দাবী রেখেছি!
দাবী করেছি সেই স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো যেন হয় মর্যাদাপূর্ণ, বাস্তবভিত্তিক এবং গ্রহণযোগ্য!
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী,
আসলে যত পেশাজীবী আছে, তাদের মাঝে একমাত্র শিক্ষকদেরই অবমাননা করা সহজ; কারণ শিক্ষকদের অনৈতিক কোন ক্ষমতা নেই কারোর ক্ষতি করার, অশুভ পেশীশক্তি নেই কাউকে আঘাত করার...তারা নির্জীব, নিরীহ!
সব কথার শেষে আপনার জন্য আসলে এরপরেও শুভ কামনাই থাকবে। 
এজন্যই যে~
শিক্ষকদের অমর্যাদা নিশ্চিত করে, আশাহীন শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি উদাসীনতা দেখিয়ে আপনি যদি জাতিকে, জাতির মর্যাদাকে সমুজ্জ্বল করতে পারেন; তো আপনার সে সাফল্যে আমার বা আমাদের শুভকামনাই থাকবে।
জাতি যদি শিক্ষা,শিক্ষক-ভিন্ন অন্য উপায়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছতে পারে এবং তা আপনার নেতৃত্বেই; তবে শিক্ষকেরা তা স্বাগত জানানোর মতন মনে উদারতা রাখে বলেই আমার বিশ্বাস! তবে, শিক্ষকেরা জাতির মেরুদন্ড গড়ে এসেছে তো এতদিন এবং সবসময়-সব জাতির জন্যই তা একইভাবে প্রযোজ্য কিনা…তাই এই অমর্যাদা, এই অব্যবস্থাপনায় তারা আসলে নিশ্চুপ থাকবে না; আর তা অন্যান্য আর সব বারের মতনই! সফল হতে পারুক কি না পারুক, তারা এই অন্যায়ের সাথে কখনোই আপোস করবেন না। আমরা সবসময়ের মতন এখনও মনে করি আপনি আমাদের আশা-ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল, আপনি কারোর যৌক্তিক দাবীকে এভাবে অগ্রায্য করতে পারেন না বা শেষ পর্যন্ত করবেন না। আমরা আপনার বক্তব্যে, আপনার বিচারে মর্মাহত বটে; কিন্তু এখনো পুরোপুরি আশাহত নই।
আমরা এখনও আশা রাখছি এবং তা আপনারই উপর~
আমাদের প্রতিনিধিদের সাথে আপনার সাক্ষাৎ হলে এবং তারা যদি সঠিকভাবে আপনাকে সব অন্যায্যতাগুলো তুলে ধরতে পারেন; তবে আপনি আপনার গতকালকের অবস্থান অবশ্যই পরিবর্তন করবেন বলেই আমার একান্ত বিশ্বাস!
এবং সেই সাথে সাথে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য, মর্যাদাপূর্ণ একটি বেতনস্কেল প্রনয়ন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রনয়ণের দাবী আর উচ্চ শিক্ষা কমিশন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার যৌক্তিক প্রস্তাবকে সুস্বাগত জানিয়ে, আপনার যোগ্য নেতৃত্বকে প্রশ্নহীন রাখবেন এবং তা বরাবরে মতনই। 
যেমনটা কেবল আপনাকেই মানায় বলে এতদিন আমরা দেখে এসেছি, জেনে এসেছি।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী যখন অভিভাবক, তখন এই যৌক্তিক দাবী পূরণ না হওয়ার কোন কারণ আছে বলে এখনও আমি মনে করি না। 
প্রয়োজন শুধু আপনার স্বদিচ্ছার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী!
Mashiur Rahman
সহকারী অধ্যাপক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

[সমকালীন ভাবনা] 
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালীন সময়ে যখন ভাল রেজাল্ট করছিলাম তখনই মনের মধ্যে একটা সুপ্ত বাসনা বাসা বেঁধেছিল যদি শিক্ষক হতে পারি তাহলে শ্রদ্ধেয় স্যারদের মতোই জাতি গঠনে সামনে থেকে ভূমিকা পালন করতে পারব। অনার্স ও মাস্টার্স দুটোতেই প্রথম হওয়ায় সেই স্বপ্ন পূরনের আকাঙ্খাটা আরও তীব্রতর হয়ে উঠল। একদিন আমাদের বিভাগের শ্রদ্ধেয় সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দীন স্যারের সাথে দেখা হলো, তিনি জিজ্ঞেস করলেন তোমার ক্যারিয়ার প্ল্যান কি? আমি স্যারকে বিনয়ের সহিত বলেছিলাম স্যার যদি একাডেমিক ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ পাই তাহলে সেইদিকেই মনোনিবেশ করব। স্যার শুনে যে জবাবটি দিলেন সেটি হলো এমন, তুমি ভাল রেজাল্ট করেছ, যাও সিভিল সার্ভিসে চেষ্টা কর, এই পেশায় এখন আর আগের মত সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ নেই, ছোট্ট ছোট্ট ছেলেরা সিভিল সার্ভিসে ঢুকে আমাদের সামনে দিয়ে প্রাইভেট কার দিয়ে ধুলা উড়িয়ে চলে যায়, আর আমরা ছাত্র জীবনের প্রথম সারির ছাত্র হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকি আর ঐ প্রাইভেট কারের ধুলোগুলো আমাদের পরিহিত কাপড়গুলো নষ্ট করে দিয়ে চলে যায়। স্যারের কথা শুনে একদিকে একটু দু:খবোধও কাজ করছিল, অন্যদিকে মনের মধ্যে এও কাজ করছিল আমরা প্রথম সারির শিক্ষার্থীরা যদি এই পেশায় না আসি তাহলে ঐ কোট-টাই পরা সিভিল সার্ভেন্ট্সদের তৈরী করবেন কারা? অবশেষে এলাম জাতি গঠনের মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আমার স্বপ্নের পেশা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায়। আমার বাবা আজও মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেনি আমার এই পেশাটি। দীর্ঘ ১৮ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালীন হয়ত তিনি সরাসরি দেখেছেন মাঠ প্রশাসনে আমলাতন্ত্রের একচ্ছত্র আধিপত্য। তিনিও হয়তবা তার ছেলেকে ঐরকম একটি জায়গায় মনেপ্রাণে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার শিক্ষকতার প্রতি প্রবল আন্তরিকতা ও কঠোর মনোভাবের কারনে আব্বু আর তেমন কিছু বলেননি। আমার এ নিয়ে মোটেও আফসোস নেই, কোনদিনও বিন্দু পরিমান আফসোস হবেও না। এই পেশায় এসেছি নিজেকে জানতে, পড়তে, অপরকে জানাতে, সর্বোপরি দেশের ও জাতির কল্যানে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে। এখানে আসিনি কাড়ি কাড়ি টাকা কামাতে, এখানে আসিনি আমলান্ত্রিক ক্ষমতার দাপট দেখাতে। একটাই চাওয়া ছিল যাতে নিজের পেশায় আত্মসম্মান ও বিবেকবোধ নিয়ে চলতে পারি। যারা জানেন খোঁজ নিয়ে দেখবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক তাঁর সীমাবদ্ধ আয়/বেতন দিয়ে কতটা হিসেব নিকেশ করে দৈনন্দিন দিনগুলো পার করেন। তারপরও শিক্ষকদের এ নিয়ে প্রবল কোন আপত্তি ছিল না। কিন্তু এমন কি হলো সরকারের যে, অষ্টম পে স্কেলে হঠাৎ করে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা শিক্ষকদের স্কেল ও পদমর্যাদার অবনমন করতে হলো? অথচ মহাজোট সরকারের নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিল শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র্য পে স্কেল দেয়া। দেশে সামরিক বাহিনী, বিচারবিভাগ আলাদা স্কেল পেতে পারলে শিক্ষকদের আলাদা স্কেলের দাবী করাটাও কি অন্যায়? শিক্ষকদের আলাদা স্কেলের অন্যতম একটা যুক্তি হলো এখানে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা, বর্তমান স্কেলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নিবে এই পেশা থেকে। কেননা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলি অনেক বেতনে মেধাবীদেরকে আকৃষ্ট করে নিয়ে যাবে। তাছাড়া বিশ্বের অনেক দেশেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য আলাদা স্কেল আছে। প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানে আমাদের চেয়ে ৫/৬ গুন বেশি বেতন পান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবী দাওয়া দিয়ে আসছিল। এর জবাবে কি পেলাম আমরা? মাননীয় অর্থমন্ত্রী বললেন শিক্ষকদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বললেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ক্লাশে পড়ান না, বাড়িতে গিয়ে পড়ান বলে। সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বললেন তা সত্যিই বেদনাদায়ক ও দু:খজনকও বটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগন নাকি সচিবদের চেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন? প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশ নেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি ভাল করে খোঁজ নেন কত পারসেন্ট শিক্ষক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশ নেন। যাদের সুযোগ আছে তারা নেন। কেন নেন? শিক্ষকদেরও পরিবার আছে, তাদেরকেও খেতে হয়। তাদের ছেলেমেয়েদেরকেও পড়াতে হয়। প্রচলিত স্কেলে প্রাপ্য স্বল্প বেতন দিয়ে যখন তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টকর অবস্থায় পড়ে যান তখনই তারা বাধ্য হয়ে বিকল্প কিছু আয় করার চেষ্টা করেন, তারা তো আর চুরি করছেন না? তারাতো বাংলাদেশকে পরপর ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হতে সহায়তা করেননি। আপনি শিক্ষকদের খোঁজখবর নিয়েছেন ভালো কথা। সাথে সাথে আপনার বর্তমানের সিপাহশালাদার আমলাদেরও যদি একটু আধটু খোঁজ নিতেন ভালো হতো। আমলারাও তাদের চাকুরীর পাশাপাশি কত জায়গায় ক্লাশ নেন, প্রশিক্ষণ ক্লাশে খ্যাপ মারেন। প্রত্যেকটি পেশার কিছু স্বাতন্ত্র্যতা আছে। প্রত্যেকটি পেশার নিয়োগের শর্ত ভিন্ন রকম। ধরুন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে গেলে কিছু ব্যতিক্রম ব্যতিরেকে শিক্ষাজীবনে ৪টি প্রথম শ্রেণী থাকতে হয়, অন্যদিকে আমলা হতে গেলে পাশ থাকলেই চলে। আমরা তাদের সাথে কেন তুলনা করব? আমলারা সরকারিভাবে যে গাড়ি, বাড়ি, প্লট পান; সেগুলো কি আমাদের শিক্ষকরা পান? আমরাতো এগুলো চাইনি আপনার কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমরা চেয়েছি আমাদের পদের কেন অবনমন করা হলো সেটার প্রতিকার, আমরা চেয়েছি জাতি গঠনের এই পেশায় মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে গেলে স্বতন্ত্র্য পে স্কেলের বিকল্প নেই। কেননা বৃক্ষ যদি উর্বর কিংবা শক্তিশালী না হয় তাহলে ভাল ফল কিভাবে আশা করবেন? আপনি বলেছেন শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা বন্ধ করে শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন কেন? আমার জানামতে শিক্ষকদের আন্দোলনে ক্লাশ পরীক্ষা খুব কম সময়েই বন্ধ থাকে। কিন্তু আপনাদের সব রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন মাসের পর মাস বন্ধ থাকে, শিক্ষার্থীদের ক্লাশ বন্ধ থাকে, সাধারন শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে তখন যদি আপনি একইভাবে কনসার্ন থাকতেন তাহলে আজকের আপনার এই প্রশ্ন নিয়ে কারো প্রশ্ন থাকতনা। আপনি বলেছেন ৯১ ভাগ বেতন বাড়িয়েছেন ভালো কথা। এটা কি শুধু শিক্ষকদের বাড়িয়েছেন? এটা তো প্রতি ৪/৫ বছর পরপর মুদ্রাস্ফীতি জনিত কারনে নিয়মিত বেতন বৃদ্ধির একটি প্রক্রিয়া মাত্র। তাই বলে কি শিক্ষকদের পূর্বেকার পদের অবনমন করা কতটা যৌক্তিক ছিল? আপনার শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় বলেছেন শিক্ষকরা ক্লাশ এ পড়ান না, বাড়িতে গিয়ে পড়াবেন বলে। আমার মনে হয় ওনার মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সবসময় কলেজের কথা মাথার মধ্যে ঘোরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক বাসায় গিয়ে প্রাইভেট পড়ান এটা জীবনে এই প্রথম শুনেছি। যাইহোক শিক্ষকরা পদমর্যাদা চাইতে গিয়ে আপনাদের কাছ থেকে যে হুমকী ধামকী এবং মিথ্যা বিভ্রান্তিকর অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন সেটা মোটেই কাম্য ছিল না। আজকের চারিদিকের নানামুখী এই মিথ্যা অভিযোগে শিক্ষকরা একবার অভিযুক্ত হয়ে গেলে এটি ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় সূচিত হয়ে থাকবে। মেধাবীরা আর এই পথে পা বাড়াবে না। পরাজিত হবে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা, পরাজিত হবে ভবিষ্যত প্রজন্ম। এখনও সময় আছে, কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে বাস্তবতা উপলদ্ধি করুন, সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সংগ্রহ করুন, শিক্ষকদের পদমর্যাদা সংরক্ষণ করুন। মনে রাখা ভালো জাতির সকল ক্রান্তিকালে শিক্ষক সমাজের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। আজকের শিক্ষক সমাজ পরাজিত হলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম পরাজিত হবে।

সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

শুধু সম্মানটুকু নিয়েই বেচে ছিল শিক্ষকরা। অর্থ নাই, বাড়ী নাই, গাড়ী নাই, মনে কোন কস্টও ছিল না। ছিল সম্মান নামক একটা নির্মল আনন্দ যা নিয়ে সুখী ছিলাম আমরা। ৮ম পে কমিশন সেই সম্মানটুকুও কেড়ে নিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনার পর মনের অবস্থা এমন হয়েছে যে নিজেকে প্রানহীন একটি নিথর, নিশ্চল প্রানী মনে হচ্ছে যার কোন অনুভূতি নাই, কিংবা অনুভূতি থাকতেও পারে না (অন্তত মাননীয় প্রাধানমন্ত্রীরকথায় তাই প্রকাশ পায়)। আসুন আমরা মাননীয় প্রথানমন্ত্রীর কথাঅনুযায়ী বর্ধিত বেতন প্রত্যাখ্যান করি,,,,,,,আর প্রমান করি আমাদের আর কিছু না থাকলেও আত্মসম্মানবোধটুকু আছে। যেটুকু আমরা যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে চাই। যদিও বর্তমানে তা বিপন্নপ্রায়,,,,,,,
মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী কাছে বিনীত অনুরোধ পাবলিক ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছাড়া অন্য কাউকে মন্ত্রী করবেন না। মাননীয় মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানেন না যে ইউনিভার্সিটির টিচার রা কোন প্রাইভেট পড়ান না। কিংবা ইউনিভার্সিটির ছাত্ররাও প্রাইভেট পড়েন না। যারা এততুকু খবর রাখেন না তারা মন্ত্রী হয়ে দেশকে কি দিবেন??? মাননীয় মন্ত্রী আপনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই ১/১১ এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে আপনারা কেউই কোন কথা বলার সাহস পাননি। তখন ইউনিভার্সিটির ছাত্র ও শিক্ষকরা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল বিধায় তারা তল্পিতল্পা গুছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। এবং তারা দ্রুত নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিল। আর এজন্য ঢাকা ইউনিভার্সিটির অনেক শিক্ষক ও আমরা তৎকালীন ছাত্ররা অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম। তার ফলশ্রুতিতে আপনারা আজ ক্ষমতায় এবং মন্ত্রী হয়েছেন। তখন কিন্তু এদেশের আমলারা সেনাবাহিনির সাথে মিলে এদেশটাকে লুটেপুটে খেয়েছেন। এখন আপনারা আবার তাদের কথায় চলে সকলের মনবেদনার কারন হচ্ছেন,,,,,এটা কাম্য নয়।

ঐতিহ্যবাহী ঢাকা ইউনিভার্সিটি সহ আরো দু-একটি ইউনিভার্সিটি ৫২ র ভাষা আন্দোলন, ৫৪ র নির্বাচন এ যুক্তফ্রণট এর বিজয়, ৬২ র হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ৬৯ র গণ অভ্যুত্থান, ৭০ র নির্বাচন, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রহিয়াছে। বলতে গেলে ছাত্র- শিক্ষকরা এসব আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অনেক ছাত্র- শিক্ষক নিজের জীবনকে অকাতরে বিলিয়েছেন। ১৪ ডিসেম্বর এ অনেক শিক্ষক, সাংবাদিক, ডাক্তার, প্রকোশলী সহ নানা পেশার অসং্খ্য বুদ্ধিজীবী কে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে তখন একজন আমলাও নিহত হননি। এ থেকে আমলাদের এদেশের মুক্তি থেকে শুরু করে সকল আন্দোলনে বিরত্ত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। সর্বোপরি এরশাদ ও মইন উদ্দিন- ফকরুদ্দিন সরকারকে নামাতে এদেশের আম জনতার সাথে ছাত্র-শিক্ষকরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কোন আমলার তখন কোন ভূমিকা ছিল না। মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী এ কথা সহজে ভূলে গেলে চলবে না।
Md Imam Hossain
সহকারী অধ্যাপক, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

৩৭ টি পাবলিক বিশ্বিদ্যালয়ে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা বর্জনই হবে প্রকৃত আন্দোলনের সূচনা এবং ফেডারেশন থেকে সে ঘোষনা আসতে হবে আজ-কালকের মধ্যেই।
ফেডারেশনের সভাপতি মহোদয় ঈদের আগে বলেছিলেন প্রয়োজনে আঙ্গুল বাঁকা করবেন!
সেটা আর কখন?
আঙ্গুলের শক্তিইতো হরণ হয়ে যাচ্ছে?
দু-দিন পরেইতো ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে।
আনেক দুর দুরান্ত থেকে ২-৩ দিন আগেই শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা দিতে রওয়ানা হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষা বর্জনের তাৎক্ষণিক ঘোষনা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে এবং আমাদের ন্যায্য আন্দোলনকে সাধারণ মানুষের মুখোমুখি দাড় করানো হয়ে যাবে।
তাই, সিদ্ধান্ত এখনই নয়তো আর কখনোই অধিকার ফিরে পাওয়া যাবেনা।
ফেডারেশনের শ্রদ্ধেয় নেতৃবৃন্দ যদি চান যে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভর্তি পরীক্ষা বর্জনের ঘোষনা না আসুক সেক্ষেত্রেও পথ খোলা আছে। শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সাথে বৈঠক শেষেই পরীক্ষা বর্জনের ঘোষনা আসুক।


Mezbah Ul Azam Sowdagar
সহকারী অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ফেডারেশনের প্রতি খোলা চিঠিঃ
প্রিয় নেতৃবৃন্দ
সংগ্রামী শুভেচ্ছা।
আজ জাতির শিক্ষাখাতের এ সংকটময় মুহুর্তে আপনাদের উপর নেতৃত্বের বিশাল ভার অর্পিত হয়েছে। এই জাতীয় দায়িত্ব থেকে একদিকে যেমন পিছপা হওয়ার আপনাদের সুযোগ নাই ঠিক তেমনি আপনাদের একটি সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে এদেশের ৩৭ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক্ সমাজ চিরদিনের জন্য এদেশের মাটিতে মাথা উচু করে দ্বাড়াবে নাকি তারা মানুষের কাছে হাসির পাত্রে পরিনত হবে।
আগামিকাল যদি কোন আলোচনা হয় -----সে ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় আপনাদের অবগতির জন্য পেশ করছিঃ
১। যে কোন আলোচনায় সফল হওয়ার ক্ষেত্রে আলোচনার কৌশল নির্ধারন করা অতি জরুরী। এটি একটি গেইম। এখানে গেইম থিওরি প্রয়োগ করতে হবে।
সেটি কী?
শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনায় সরকারের কৌশল হবে যেনতেন উপায়ে একটা আশা, আশ্বাস, নীতিকথা ইত্যাদি দিয়ে কূ্টনৈতিক চালে ভর্তি পরীক্ষা শুরু করা ।
কারন ভর্তি পরীক্ষাই হচ্ছে এখানে সরকারের আতংক। আর আমাদের জন্য bargaining tools ।
এই হাতিয়ার তারা ব্যাবহার করতে পারলে তারা সফল হবে আর আমরা ব্যাবহার করতে পারলে আমরা সফল হব।
সুতরাং সরকারের এই সম্ভ্যব্য negotiation strategy এর জবাব ও কৌশল আগে থেকেই প্রস্তুত রাখতে হবে। We should remember that Admission test is our strong bargaining tool.
এই tools হারিয়ে ফেললে আলোচানায় আর আমাদের কোন শক্তি থাকবে না। পরাজয় অনিবার্য।
২। যদি সম্ভব হয়, আরেফিন স্যার কে ফেডারেশন থেকে অনুরোধ করা যেতে পারে প্রতিকী হলেও পুরস্কারটি ফেরত দেয়া যায় কি না। এতে অনেক বড় মিডিয়া কাভারেজ পাওয়া যাবে (এই দাবিটি Optional)।
৩। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু তুলনার কথা বলেছেন ।। সেহেতু ওই আলোচনায় প্রত্যাকটা পয়েন্টে আমলা এবং আধ্যাপকদের সুযোগ সুবিধার বিস্তারিত বিবরন Strongly present করতে হবে।. গাড়ি, বাড়ি লোন সুবিধা, সচিবরাও কোথায় কোথায় ক্লাশ নেন, তাদের স্ত্রীদের গাড়ী বিলাশ, শিক্ষা খাতের ট্যুর ও স্কলারশিপ ছিনাতাই, বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বেতন, অফিসিয়াল পাসপোর্ট, বিমান বন্দরে ভিআইপি লাউঞ্চ ব্যাবহার, বিদেশে প্রমদ ভ্রমন, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স, চাকূরীর বয়স ইত্যাদি বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে আলোচনাকে আমাদের পক্ষে আনতে হবে।
এর পর দাবির বিষয়ে যৌক্তিক সিদ্ধান্তে না আসলে ভর্তি পরীক্ষা সহ সকল কার্যক্রম অনির্দিস্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করতে হবে। সাংবাদিক সম্মেলন করে জাতিকে এগুলো জানাতে হবে।
মনে রাখতে এক্ষেত্রে যে কোন ধরনের দুর্বলতা বা ফাদে পা দেয়া চিরকালের জন্য শিক্ষক সমাজ কে আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত করবে।
শিক্ষক সমাজের এই যৌক্তিক আন্দোলনে ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ ইতিহাস হবেন অথবা জাতির কাছে ঘৃনিত হবেন- আমরা প্রথমটাতেই আশা বাদী ......
ভর্তি পরীক্ষা বন্ধই এখন দাবি আদায়ের একমাত্র পথ।
আমরা অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন স্যারের কথায় আশাবাদী হয়েছি।(এ আন্দোলনের সাথে আছে পাঁচ কোটি শিক্ষা পরিবার ও দেশের ১৬ কোটি মানুষ।ওদের সমর্থন ও ভালোবাসায় আমরা সিক্ত।বন্ধুরা মন খারাপ করবেনা।এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে।জয় আমাদের সুনিশ্চিত।আন্দোলন চলবে।জাতির সামনে ষড.যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচিত।") 
আমরা বিজয়ী হবই...... ইনশা আল্লাহ্‌...
Hasan Hafizur Rahman
প্রভাষক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

যদি আজকের ম্যাচে শিক্ষক ফেডারেশন তথা বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের মেরুদন্ডটির নূন্যতম বিচ্যুতি দেখা দেয় তবে আমাদের শিক্ষকদের অবস্হা হবে হীরক রাজার দেশের সেই শিক্ষকের মত। আর রাজা হিসাবে থাকবে আমলা নামক সর্বোচ্চ করনিকরা। এটার বাস্তবায়ন ঘটবে এই প্রধানমন্ত্রীর হাতে, যিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা, যেই বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন যুগান্তকারী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ আইন (University Act -1973)। এটা হতে পারে না, এটা হবে না - আমরা শিক্ষক সমাজ এটাই বিশ্বাস করি, এখনো। যদিও এত বেশী অপমানিত হইনি কখনো- তারপরও আশা করি সরকারের ভূল ভাঙ্গবে আলোচনার মাধ্যমে কিংবা শিক্ষকদের কঠোর কর্মসূচি পালন করার মাধ্যমে। এই দাবি পূরনে সরকারের ষোল আনাই লাভ আর দেশের শতভাগ। তাই ভুল ভাঙ্গানোর জন্য এই মূহুর্তে শিক্ষকদের সামনে আছে ভর্তি পরীক্ষা আর স্বাভাবিক ক্লাস-পরীক্ষা। এই দুটাই এখন ঘুম ভাঙ্গানোর গিফট। এই গিফটে সাময়িক সমস্যা (যা দ্রুত সমাধান যোগ্য) হলেও কিছু সময় পরেই হাসবে সরকার, হাসবে দেশ। আর না হয়, আজকের শিক্ষক নেতারা যারা সাময়িক লাভের জন্য মহা কামলাদের দ্বারা ঘুমন্ত নেতাকে ঘুমে রেখে স্বার্থসিদ্ধ করে কেচোর মত পলায়ন করবেন তারাই আগামী দিনে এই ঘুমন্ত নেতার ধ্বংসের জন্য দায়ী থাকবেন - এটাই সত্য। আমরা আর কোন মীর জাফর চাই না - এই বাংলায়। ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায়ের পরিবর্তে লিখা হোক, শিক্ষার মাধ্যমে একটি দেশের পরিবর্তনের কথা - আমার এই হত দরিদ্র বাংলাদেশের কথা।
সহযোগী অধ্যাপক, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

কিছুই ভাবতে পারছি না, ভাবলেই দুই চোখ বেয়ে ঝরে পড়ছে পানি। এত অপমান আমি কখনো কোনদিন অনুভব করিনি। শিক্ষক তুমি আজ কলংকিত। আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করে অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমি এই দেশকে নিয়ে এত আশাবাদী হয় কি করে? আজ হয়তঃ বলতে পারি নিজের ভিতরটা অশান্ত হলেও আমি অন্যকে শান্তি দিতে চেয়েছি, আশা জাগাতে চেয়েছি অনেকের মাঝে। আজ আমার মনে আশা জাগাবে কে? কে আমায় শান্ত করবে? রাষ্ট্রের অভিভাবকের এই কি ভাষা? এই ভাষা শরীরের প্রতিটি শিরা এবং উপশিরাকে ভেদ করেছে, ছিড়ে টুকরো টুকরো করেছে, অসহ্য যন্ত্রণা এখন সর্বত্র।

শিক্ষক যেখানেই শিক্ষা দান করেন তিনি শিক্ষক, তিনি চোর নন, ঘুষখোর নন, চাঁদাবাজ নন, কিসের সাথে কিসের তুলনা করছেন তারা? নিজ প্রতিষ্ঠানে ফাকি না দিয়ে একজন শিক্ষক তার জ্ঞান যত বেশী জায়গায় ছড়িয়ে দিবেন ততই এই জাতির উপকার। জ্ঞান বাসায় আবদ্ধ রাখার বিষয় নয়, এইটি ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়। অনেক শিক্ষক যারা বিভিন্ন জায়গায় ক্লাস নিচ্ছেন তাদের ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দিলেও তাদের জ্ঞান বিতরণ বন্ধ করা যাবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি অচিরেই সেমিনার, ওয়ার্কসপ এর সবই বন্ধ করে দিবেন? কারণ সেইখানেও অর্থ আয় করা যায়। যে মেধা আজ আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য, গবেষণার জন্য ব্যয় করছি তার দশ ভাগের এক ভাগ ব্যবহার করে যে বেতন বৃদ্ধির কথা তারা বলছেন তার দশ গুন আয় করা সম্ভব, মেধাবীদের জন্য কোন কাজই অসম্ভব নয়, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলছি।
প্রভাষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়


আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে অনেক কিছু বললেন, আমরা শুনলাম আর বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম। যখন একের পর এক, অর্থমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের নিয়ে লাগামহীন ও অযৌক্তিক কথাবার্তা বললেন তখনও আমরা স্তম্ভিত হয়েছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজ আমরা আমাদের শেষ আশাটুকু হারানোর সাথে সাথে অনেক লজ্জিতও হলাম। আমরা আমাদের প্রাপ্য সম্মান ফিরে পেতে চেয়েছিলাম, আপনার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি (স্বতন্ত্র বেতন স্কেল) দ্বিতীয় টার্মেও পুরনতো এখনও হয়নি উল্টো এতগুলো কথা আজ আমাদের মর্মাহত করেছে। যখন ৮ম বেতন স্কেল নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল তখনও আমরা আমাদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল নিয়ে কথা বলিনি। আজ কেন শিক্ষকেরা কথা বলছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটু ভেবে দেখলেন না!!! আজ আমরা দেশের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই কথা বলছি। দেশের এরকম অবশ্যম্ভাবী অন্ধকারের কথা চিন্তা করেই আমরা শিক্ষকদের সম্মান ফিরেয়ে দিতে বলেছিলাম এবং বলছি। আর কোন প্রতিভাবান ছাত্র শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিতে চাইবে না!! আমরাও আর বলতে পারবনা শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড!!! বলতে পারবনা দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা!! সৃষ্টিসুখের উল্লাসে মেতে উঠতে আর মন চাইবেনা!! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শুধু ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নয় দেশের ভবিষ্যৎও আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষক Federation কে অনুরুধ করব, আমাদের নিয়ে আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যান। আমরা সবসময় আপনাদের সাথেই থাকব। এমন পরিস্থিতিতে জাতিকে গভীর অন্ধকারে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করুন। আন্দোলন ছাড়া এ দেশে কখনো কেউ কিছু অর্জন করতে পারেনি। অন্তত পক্ষে, এই আন্দোলনটা করুন একটি সুন্দর বাংলাদেশের জন্য।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার জ্ঞাতার্থে বলছি- ২০১৫ সালে মেডিসিনে নোবেল Prize অর্জন করেছেন Prof. Satoshi Ōmura (Japanese), William C. Campbell (Irish) and Chinese Youyou Tu. ৩২৭ জন candidate এর মধ্যে Nobel Laureate হবার গৌরব অর্জন করেছেন। উনারা জন্মগ্রহন করেন- Satoshi Ōmura - 1935, William C. Campbell - 1930 এবং Youyou Tu - 1930. উনাদের সবার বয়সই এখন ৮০ প্লাস। প্রথম দুজন এই বয়সেও America-এর Wesleyan University এবং Drew University তে বিশেষ মর্যাদায় কর্মরত আছেন। Prof. Youyou Tuও Chaina তে খ্যাতিমান Research Institution-এ কর্মরত আছেন।
China-দের থেকে American-রা মনে হয় অনেক বেশিই বোকা, না হলে এমন বয়সের কাউকে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে বিশেষ মর্যাদায় রাখে!!! তাও আবার অন্য কোন দেশের মানুষকে!!

সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের মানুষ গরীব হতে পারে তবে এতোটা টাকার কাঙ্গাল না। বেশির ভাগ মানুষ সরকারি চাকুরির দিকেই তাকিয়ে থাকে শুধু একটু সামাজিক মর্যাদার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কেনো শিক্ষক হয় আর কারা হয় সেকথাও দেশের মানুষ ভালোই জানে। সামান্য বেতনে কি হয় সেটা হয়তো জানাতে চাইনা দুনিয়ার মানুষকে। সাদা পরিষ্কার জামাটা গায়ে দিয়ে অন্যদের জানান দিতে চাই তারা মহা সুখে আছে। কে জানে তার ভিতরের বৃত্তান্ত? বাংলাদেশের রাজনীতির মাথা যারা তারা হয়তো ভুলেই বসে আছে কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয় আর কেনোই বা হয় তার সবটা একটু সন্মান দিতেও আপনাদের এতো কার্পন্য?টাকার কাঙ্গাল হলে কেউ এই চাকরিতে আসতো না। সামাজিক মর্যাদা যেটুকু ছিলো তাও কেড়ে নিলেন সেটা কি মোটেও শোভনীয়? অনেকেই দাতের চৌদ্দ পাটি বের করে বিদেশ দেখায়, একবারো কি জানতে চেয়েছে এসব দেশের ছাত্রদের জীবন ধারনের জন্য মাসিক যে অর্থ বরাদ্দ থাকে তার দেড়ভাগের সমানও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন না। বিশ্বমানের ছাত্র আর বিরাট মাপের গবেষনা আকাশ থেকে টুপটাপ পড়েনা। সবাই আঙ্গুল তুলে কিছু শিক্ষকে দেখায় আসলে তারা নিজেরাও বিভিন্ন দলের লেজুড় বৃত্তিতে মত্ত এবং তারাও কারন মর্যাদার অমর্যাদা করনে। বিশেষ কিছু মানুষ গড় পড়তা সবার প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনা তা আমরা বহু আগেই ভুলে গেছি। আমরা আসলে অন্যের অপমানে দাত বের করে হাসতেই ভালোবাসি তাই এই একে ওকে উদাহরন দিয়ে দেখাতে ভালোবাসি। স্কুল কলেজের শিক্ষকদের কথা না হয় বাদই দিলাম, তারা তো দুনিয়ার ফেলনা আমাদের দেশের কাছে। এত অপমান করে কেউ সুখে থাকেনা তবু সবাই এটাই করে চলে সিংহাসন ঠিক রাখার জন্য, চালে রাজ চাল। তবু বিশ্বমানের ছাত্র গড়ার লক্ষ্যে সর্বদা সক্রিয় এই সর্ব বঞ্চিত শিক্ষক কূল। যে যতো পারে ঘৃনা করুক , দূরে সরাক, বঞ্চিত করুক তাতে কিচ্ছু আসে যায় না। আমি শিক্ষকদের অন্তর থেকে সন্মান করি তা আমি শিক্ষক বলে নয় বরং একজন সচেতন মানুষ বলে।
আবারো বলি, যোগ্যতা নিয়ে কথা বলার জন্য আঙ্গুল তোলার আগে দয়া করে আঙ্গুলটা পরিষ্কার করে নেবেন।


সহকারী অধ্যাপক, শাবিপ্রবি
ভাবছি চাকরিটা ছেড়ে দিব। লাল গরু চড়াব। কালো ছাগল। ধান চাষ করব। আর মাছ। এক-তলা একটা কটেজ থাকবে। ট্রেডিশনাল কুড়ে ঘরের মতন। অনেকটা। কোনমতেই সচিব স্যারদের (কু)নজর যেন না পড়ে।
টাকার জন্য এই চাকরিতে আসি নাই। এই চাকরি পাওয়ার আগে ইন-ফ্যাক্ট তিন-গুন আয় করতাম। বছরে। এখনকার তুলনায়। তাও ১০-বছর আগের কথা। দু'টি জিনিসের জন্য এসেছিলাম। একটি পেয়ে গিয়েছি। আর্থিক মূল্যমান না থাকলেও ওটিই আমার কাছে সবচাইতে দামি। যারা আমাকে ব্যাক্তিগত ভাবে জানেন তারা হয়তো ধারনা করতে পারবেন। আর অন্য জিনিসটা কোন একদিন কেড়ে নেয়া হবে বলেই শঙ্কা ছিল। আমার চাকরির প্রথম অংশ কাটলো না। দেখেই ফেললাম।
একটা প্রিমনিশান। আর বছর-দশেক। আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে (সর্ব-জনাব) সচিব স্যারদের মতন মনোভাবপুষ্ট, সাধারন পুলিশ ভাইদের সমান শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন এবং সামরিক বাহিনীর হাবিলদার ভাইদের মতন পেশি-শক্তিসম্পন্ন শিক্ষক পেয়ে যাব আমরা। সম্ভবতঃ সরকার-যন্ত্র এটাই চাচ্ছে। আর এখনকার শিক্ষকেরা সাসকাচুয়ানে (অথবা আবুধাবি) পালিয়ে বাঁচবেন। সাথে যা কিছু মেধা আমাদের শিক্ষাব্যাবস্থা অবশিষ্ট রাখতে দিয়েছিলো। সেসব সহ।

ভালোই।

সহকারী অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ,
আসসালামু আলাইকুম। নিশ্চয় সকলে ভগ্ন হৃদয়ে যন্ত্রণা কাতর সময় পার করছেন। কিন্তু এর থেকে স্থায়ী মুক্তির পথ বের করতেই হবে। এই লাঞ্ছনার প্রতিকার কিভাবে করতে হবে? কোন প্রক্রিয়ায়? এই মুহূর্তে প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি জরুরী সাধারন সভা কি আহবান করতে পারে? নিশ্চিতভাবে এখনকার চাল টা আমাদের দিক থেকে আসতে হবে। সরকার অনেক খেলেছে, আর তাকে খেলতে দেওয়া যায় না। জাতিকে আমাদের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। আসুন আমাদের সকল শক্তি প্রয়োগ করি, কেননা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সেবা প্রদানের সর্বশেষ প্রেষণা - সম্মানটি পর্যন্ত কেড়ে নেয়া হয়েছে। অনুগ্রহ করে এ সময় কেউ হাতে তৈল নিয়ে ঘুরবেন নাঃ কোন কিছু আঁকড়ে ধরতে পারবেন না; এমনকি আপনার ছিটকে পরা থেকেও কেউ আপনাকে উদ্ধার করতে পারবে না। আশা করি শিক্ষকগণ বুদ্ধিমান, দূরদর্শী। তাঁরা ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন না। বিশেষভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলতে চাই, তাদের প্রতি বাংলাদেশের উচ্চাশা স্বাভাবিক। ইতিপূর্বে ৫২, ৬৯, ৭১... সহ বড় দুঃসময়ে তাদের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। পর্যায়ক্রমে ছাত্রদেরও সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন, তাদের অভিভাবকের আত্মিক মৃত্যুতে উত্তাপহীন থাকার কোন সুযোগ তাদের আর অবশিষ্ট নেই।
বিনীত,
শরীফ ইসলাম
Niaz Uddin
অধ্যাপক, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ,
আজ পুড়ছে আমাদের সবার হৃদয়, কাঁটা ঘায়ের যন্ত্রণায় দগ্ধ আমাদের বিবেক। আমার ১০ বছরের মতো এই শিক্ষকতা জীবনে এত অপমান, এত লাঞ্ছিতবোধ কখনই করিনি, এতটা ক্ষত আর কখনো হয়েছে কিনা ঠিক বলতে পারছি না। জানি না কার কেমন লাগছে। আমার হৃদয়ের ক্ষরণ আমি শুনতে পাচ্ছি। বুকের মাঝে কেউ যেন ছুরি চালিয়ে দিয়েছে মনে হচ্ছে ... ...
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান ব্যাক্তি কর্তৃক অবজ্ঞা, অপমান, হুমকি-ধামকি সত্যিই এই হৃদয়কে এতটাই দগ্ধ করেছে যে মনে হচ্ছে আমার পুরো পৃথিবীটা দুলছে। এত দাম্ভিকতা আর তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য আচরণ বলেই দিচ্ছে উনার দৃষ্টিতে আমরা কতটা অপাংক্তেয় আর সচিবরা হচ্ছেন অতি পূজনীয়। তাঁরা কেন পূজনীয় শুধু এটা বুঝতে একটা তথ্যই যথেষ্ট, তা হল ডি.সি সাহেবরা হলেন রিটার্নিং অফিসার। বাকীটা আপনার বুঝে নেন।
প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ, এবার আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। এতটা অপাংক্তেয় আমরা কখনই ছিলাম না। দলকানা বর্ণের রাজনীতির সর্বশেষ ফলাফল আজ পেয়ে গেলাম আমরা। আসুন আমরা শুধুমাত্র শিক্ষক সম্প্রদায়ের মান মর্যাদা সংরক্ষণের জন্য যা যা করা দরকার তা করি।
আজ যদি আমরা হেরে যাই, যদি ব্যর্থ মনোরথে ঘরে ফিরে যাই তবে এই প্রফেশানে আর থাকার দরকার নাই। আমরা যদি মাথা উঁচু করে চলতে না পারি এই রাষ্ট্রে তবে কিভাবে আমরা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে শেখাব? কিভাবে একটি উঁচু নৈতিকতা সম্পন্ন জাতি তৈরি করব?
আসুন, আমরা সবাই মিলে একত্রিত হয়ে হৃত মর্যাদা পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শরীক হই। বিজয় আমাদের হবেই।
Md. Tarikul Islam
সহযোগী অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিও দেখলাম। দুঃখিত, একজন প্রধানমন্ত্রীকে খুঁজে পেলাম না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নিয়ে উনার বক্তব্য শোনার পর মনে হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও একেকটা জুট মিল হয়ে গেছে, অচিরেই গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের দরকার পড়বে। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম। কোন পাপে যে মাস্টারি করতে এসেছিলাম, আজ কর্পোরেট দুনিয়ায় ভালো জায়গায় থাকতে পারতাম। দেশের প্রধানমন্ত্রীও যখন শিক্ষকদের সন্মান দেন না, তখন বুঝতে হবে এই জাতির সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে যাচ্ছে !!
যেসব ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নজর দিতে পারেনঃ
১। উনার আজকের বক্তব্য শিক্ষক সমাজকে কোথায় নিয়ে গেলো?
২। একজন শিক্ষক কোন পর্যায়েই যে একজন সচিবের সমান সুবিধা পান না সেটার জন্য একটা লিস্ট করতে হবে? প্রধানমন্ত্রী এটা জানেন না, বিশ্বাস হয়না 
৩। কতজন শিক্ষক বাইরে ক্লাস নিতে যান? ২-৫%? তাতে কতজন হয়? আচ্ছা ধরলাম ১০%। এইজন্য বাকি ৯০% কে আপনি গোনার মধ্যেই নিলেন না? 
৪। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি কি দয়া করে কাউকে দিয়ে IUB and NSU এর MBA program এ কতজন সচিব ক্লাস নেন একটু খোজ নিবেন? তাহলে বুঝতে পারবেন আপনাকে অনেকগুলো ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছিলো
৫। বাহিরের পদে শিক্ষকদের নিয়োগ দেন কেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? ব্যাংকে কেন একজন বা দুজন শিক্ষককে নিয়োগ দিবেন যারা আপনার খুব কাছের, কিন্তু এর বিনিময়ে বাকি সব শিক্ষকদের অপমান করবেন? 
৬। যেসব শিক্ষকরা ৩০-৪০ বছরে চাকরিতে জয়েন করেন উনারা কত বছর চাকরি করতে পারেন একটু ভেবে দেখেবেন কি? শিক্ষকদের সবাই কিন্তু bachelor শেষ করে জয়েন করা না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী 
৭। বয়স নিয়ে কথা বললেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পৃথিবীর সব উন্নত দেশ শিক্ষকদের বয়স পুড়িয়ে গেলেও ধরে রাখে যে উনারে intellectually contribute করতে পারবেন। চীন, জাপান, আমেরিকা, ……… সব জায়গাতেই হচ্ছে
Kamrul Hassan
অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রাজনীতিকদের লেহন করতে রাজনীতিবিদদের প্রেসক্রিপশনের ভিত্তিতে রাজনৈতিকভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষকদের মান নিচে নামিয়েছে কারা? আমরাই আমাদের শত্রু। নিজেদের তৈরী সেরা ছাত্র বা ছাত্রীকে বাদ দিয়ে ১৭তম বা ২০তম ছাত্রকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দিয়ে গোটা শিক্ষক সমাজ আজ জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।
হৃত সম্মান পুনরোদ্ধার করতে হলে আজই আমাদের শপথ নিতে হবে যে, আজ থেকে কোন শিক্ষক আর কোন রাজনৈতিক দলের শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকব না। শিক্ষকরা কখনো কোন দল বা মতের দাস হতে পারে না। শিক্ষকরা কেবল মাত্র বিবেকের দাস হতে পারে। শিক্ষকরা সদা সর্বদা সত্য কথা বলবে। সেই সত্য কথা কার পক্ষে গেল আর কার বিপক্ষে গেল এটা কখনো বিবেচনায় আসতে পারে না। আমাদের প্রত্যেককে সত্যাজিত রায়ের উদয়ন পন্ডিত হতে হবে। শিক্ষকতো হবেন ছাত্রের কাছে, সমাজের কাছে উদাহরণ। কোন দলের লেজুরবৃত্তি করলে উদাহরণ হওয়া যায় না। হয়ত সামনা সামনি সমীহ পাবেন কিন্তু দুরে গিয়ে ঘৃনা বাক্য ছুড়বে।
বর্তমানে আমরা শিক্ষকদের অনেকেই সত্যাজিত রায়ের "Gobeshok Gobochondro Gyanotirtho Gyanorotno Gyanambudhi Gyanochuramoni" নামক রাজনৈতিক যন্ত্রের মধ্য দিয়ে গিয়ে পাপেটের মত হয়ে গেছি। শুধু ক্ষমতাধরদের লেহন করে উচ্ছিষ্ট ভক্ষণে ব্যাস্ত। আর নয়, আমরা যদি একেকজন উদয়ন পন্ডিত হতে পারি আমাদের ছেলেমেয়েদের চাকুরীর জন্য আর বিদেশ যেতে হবে না, তাদের পড়াশুনার জন্য বিদেশ যেতে হবে না। বড় পর্দায় যদি একবার তাকান বুঝতে পারবেন এভাবে চাটুকারী করে পরিশেষে কারো নেই। এমনকি নিজে সাময়িক লাভ পেলেও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি কারণ সমাজের ক্ষতি করে আমরা কেউ ভালো থাকতে পারব না। তাই আমাদেরকে আমাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে এমন বানাতে হবে যেমন প্রতিষ্ঠানে আমরা আমদের সন্তানকে পাঠাতে স্বপ্ন দেখি।
Sourav Ray
সহকারী অধ্যাপক, শাবিপ্রবি

I am very much shocked!! I didn't find our prime minister in her speech!We may personally belong to different idiologies but for the shake of our dignity we need to be united. It's now or never......
We need to go for all out action....no class, no exam, no admission test......
Masud Kaium
সহকারী অধ্যাপক, নোবিপ্রবি

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যে ভাষায় এবং ভঈিতে কথা বলেছেন একজন শিক্ষক হিসেবে নিজেকে অনেক ছোট মনে হচ্ছে। আমরা শিক্ষকরা বেতন বাড়ানোর জন্য কখনোই আন্দোলন করছিনা আমাদের আন্দোলনটা সন্মান রক্ষার। আমার মনে হয় আপনাকে ভুল বুজানো হয়েছে!
আপনি একটি বিষয়ে জানতে চেয়েছেন শিক্ষক এবং সচিবরা কি কি সুবিধা পায়। আপনি বলেছেন কতজন শিক্ষক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয় আপনি জানেন তাহলে আমার মনে হয় আপনি আরও ভালো করে জানেন শিক্ষক এবং সচিবরা কি কি সুবিধা পায়। শিক্ষকরা কে কি করে সেটা যদি জানা থেকে তবে সচিবরা কে কি করে সেটাও নিশ্চয় জানা আছে বা জানা থাকা দরকার। আপনার জানা থাকা দরকার অনেক সচিবরাও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়, অনেক সচিবরাও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক। আপনার এটাও জানা দরকার শিক্ষকদের scholarship নিয়ে সচিবরা বিদেশ যায়! কিন্তু কেন?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকরা আপনার শত্রু বা প্রতিপক্ষ নয়। আমরা একটা নিদিষ্ট গণ্ডির মধ্যে থাকি এবং পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। তাই বলে আমাদের এত পরগাছা ভাবার দরকার কি!

Swapon Fouzder
শিক্ষক, পটিয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আমাদের একজন সহকর্মীর মন্তব্য “৩৭ টি পাবলিক বিশ্বিদ্যালয়ে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা বর্জনই হবে প্রকৃত আন্দোলনের সূচনা এবং ফেডারেশন থেকে সে ঘোষনা আসতে হবে আজ-কালকের মধ্যেই। ফেডারেশনের সভাপতি মহোদয় ঈদের আগে বলেছিলেন প্রয়োজনে আঙ্গুল বাঁকা করবেন “।
আমিও মনে করি যে, দেশের উন্য়ন নিশ্চিৎ করার ক্ষেত্রে প্রশাসন-আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও শিক্ষা আর শিক্ষকও অন্যতম চালিকাশক্তি, তা প্রমান করার সময় এসেছে...। ধমকে ভয় পাওয়ার সময় আর সুযোগ কোনটাই নেই...

Al Rashid
প্রভাষক, যবিপ্রবি

আজকের দিনটি বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে শিক্ষকদের জন্য একটি কালো দিন হিসেবে লেখা থাকবে। আমার জানামতে ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশের কোন প্রধান নির্বাহী এভাবে শিক্ষকদের সম্মান আর বেতন-ভাতা নিয়ে কথা বলেন নাই। এ সরকারকে কিভাবে শিক্ষাবান্ধব বলবেন? যারা শিক্ষকদের বেতন কমানোর হুমকি দিচ্ছেন তারা কিভাবে জাতিকে সামনের দিকে পথ দেখাবে? নাকি আমরা অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছি? এজন্যই কি দেশ নবজন্ম লাভ করেছিল? শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করেছে? এরপরও কি আমরা বসে থাকব?
প্রভাষক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

স্পীচলেস হবো, নাকি সেন্সলেস হবো...? তবে হোপলেস...
গতকাল এ মন্তব্য করেছিলাম... 
“একমাত্র ভরসা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। নাকি তিনিও এ ব্যাপারে কনভিন্সড হয়ে আছেন (যদিও এটা বিশ্বাস করতে চাইনা)। আমাদের সম্মানীয় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ কি তাঁর সঙ্গে বসার কোনো উপায় বের করতে পারছেন না..? বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা ‘তলে তলে ‘ এত অপাংতেয়/অবহেলিত হয়ে গেলো কবে থেকে, কিভাবে...? আমাদের গুরুজনরা কি এটি উপলব্ধি করতে পারছেন আদৌ...? 
এবার যদি শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত না হয় অথবা শিক্ষকদের অধিকার স্বতন্ত্র বেতন স্কেল বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে বড় ধরণের প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার হবেন শিক্ষকগণ। আগামী ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য ঢাবি ও জবি’র ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করে দেশবাসীকে জানান দেয়ার টেস্ট কেস হিসেবে নেয়া যেতে পারে।
‘বর্তমান সরকার শিক্ষা ও শিক্ষক বান্ধব’- এটা এখনও আমরা বলি ও বিশ্বাস করি। কিন্তু সরকারের এখন প্রমাণ করার সময় এসেছে এ উপাধি। আমরা চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি উপলব্ধি করুন।”
-----আজ আমাদের শেষ ভরসাস্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ বক্তব্য। তাহলে এবার বুঝুন... আমাদের নেতৃবৃন্দ কোথায় আছেন... একটু দেখা করার সুযোগ পেলেন না... আর সচিবরা ঠিকই প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে কনভিন্সড করে রেখেছেন। আজ তার প্রমাণ মিলল। এখন আমাদের নাবিকগণ (শিক্ষক নেতা) কোন তীরে শিক্ষকদের নৌকা নিয়ে যাবেন... সেটাই দেখার বাকী। তবে শূন্য, দেখি সবই শূন্য / ভালোবেসে একি হলো পূণ্য...

Shariful Islam
সহকারী অধ্যাপক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

যুদ্ধক্ষেত্রে অপরপক্ষকে হারানোর অন্যতম কৌশল হচ্ছে তাকে মানসিক ভাবে দুর্বল করে দেয়া, আর এটা করে সরকারের সব পক্ষই চাচ্ছে আমরা এই আন্দোলনে ইস্তফা দেই। আজ আমরা যে যুদ্ধে নেমেছি হতাশ হয়ে, লজ্জায় কিংবা ক্ষোভে এখান থেকে পিছনে ফেরার কোন পথ কিন্তু নেই।পথ যদিও কঠিন তবে অসম্ভব নয়। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাহস এবং ধরয্য ধরে আমাদের দাবীতে অটল থাকতে হবে। আন্দোলন কঠিন থেকে কঠিনতর হবে লক্ষ্যে পৌঁছা না পর্যন্ত।

সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

হ্যাঁ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি শিক্ষকদের অনেক বেশি দিয়ে ফেলেছেন আর সেটি বেতন না লজ্জা, অপমান আর তাচ্ছিল্য। এর আগে কোন সরকারের আমলে শিক্ষকেরা এতটা অপমানিত হয়েছে কিনা আমার জানা নাই (আমার জানা ভুলও হতে পারে)। বেতন শুধু শিক্ষকদের বাড়ে নাই, সকল পেশাজিবীদের বেড়েছে।
এখনও আমাদের যেসব শিক্ষক নেত্রীবৃন্দের ঘুম ভাঙ্গে নাই, তারা পদ পদিবীর আসায় রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দের পশ্চাদ লেহন করেন, আর আমাদের মত আম শিক্ষকদের চুড়ি কিনে দিয়েন পড়ে বসে থাকব, আর মনের আনন্দে গাইব আমলা ছাড়া আমরা সবাই কামলা
Farid Ahmed
অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আজ নাকি বিশ্ব শিক্ষক দিবস! 
অথচ দেশের প্রধানমন্ত্রী যা বলেলন! 
২০১৫ সালের বিশ্ব শিক্ষক দিবস সারাজীবন মনে থাকবে। আমার শেখার অনেক বাকি! যেন মহান আল্লাহ আমাকে সত্যিকার শিক্ষক হতে দেন। সক্রেতিস এর মত একজন শিক্ষক আজ খুব প্রয়োজন।

Helal Tipu
তবার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যটা শুনি ততবার তীব্র কষ্টে শরীর কেপে উঠে ! এত অপমান হজম করতে যেয়ে বার বার মাথা ঘুরাচ্ছে! এখন পর্যন্ত শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ করা হয়েছে কি ? কোনো কর্মসূচি দেয়া হয়েছে কিনা আমি জানিনা ! দয়া করে কিছু বলুন.. হয় প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব গ্রহণ করে শিক্ষকদের বেতন কমানোর জন্য, চাকুরীর বয়স কমিয়ে ৫৯ করা, সচিবদের সাথে শিক্ষকদের তুলনা করে যে যে সুবিধা শিক্ষকরা সচিবদের থেকে বেশি পান (পান কিনা জানিনা ) সব সুবিধা বাতিলের জন্য আবেদন করেন আর ঘরে ফিরে যান শিক্ষকদের সম্মান কে কবর দিয়ে , অথবা যত দ্রুত সম্ভব ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিন ! বসে থাকার সময় নাই।
সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষকদের নিয়ে উনার নিজস্ব মতামত প্রদান করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি । তবে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসাবে উনার কথার সাথে একমত নই এবং আমি জানি না, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের কেউ উনার বক্তব্য এর সাথে একমত হতে পেরেছেন কিনা । আমাদের ব্যর্থতা হলো, এই দেশের মানুষ বিশ্বাস করে যে আমরা টাকার জন্য আন্দোলন করছি এবং ছাত্র-ছাত্রী দের ভবিষ্যত নষ্ট করছি । কিন্তু কেউ এটা বিশ্বাস করে না, একজন ভালো শিক্ষক ই পারে একজন ভালো ছাত্র তৈরী করতে এবং উভয়ে মিলেই গড়ে উঠে একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয় । গত ৪৩ বছরে একজন ভালো শিক্ষক গড়ে উঠার পথ তাই ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, তাহলে কিভাবে আমরা একটা ভালো বিশ্ববিদ্যালয় পাব । তবে আমরা অনেক ভালো আমলা এবং সচিব পাব যারাই ভবিষ্যত এ বিদেশে গিয়ে শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা নিয়ে শিক্ষা কে এগিয়ে নিয়ে যাবে, আমাদের মত শিক্ষক দিয়ে এই দেশের কি লাভ হবে ? কিচ্ছু হবে না !

সহকারী অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনার গঠিত মন্ত্রীপরিষদ জাতীয় কমিটির কিবা সাধ্য আছে আপনার মতামত উপেক্ষা করার। আপনিতো মতামত দিবেন না বলে, অনেক কঠোর মতামত দিয়ে ফেলেছেন। এরপর কি আর কিছু বলা যায়।বা তদের কিছু বলার থাকে??
আপনার প্রতি সবিনয় অনুরোধ
১) যেসব শিক্ষক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরিরত অবস্থায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ক্লাস নেন তাদের সঠিক তথ্য ও তালিকা যদি আপনার কাছে সত্যি থেকে থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষভাবে ব্যবস্থা নেন।
২) আপনি পরোক্ষভাবে শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন , তা আপনি বাস্তবায়ন করুন। দেখেন শিক্ষকরা আন্দোলন থেকে সরে আসেন কিনা।
আমরা সেই শিক্ষক যারা আপনার প্রিয় আমলাদের মত মেধাবি না হলেও সেসব চাকুরি পায়ে ঢলে শিক্ষক হয়েছি, টাকার কাঙাল আমরা না।

আপনি যখন জেলে ছিলেন , তখন আপনার এসব প্রানপ্রিয় আমলারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চামচামু করেছে, আর এসব শিক্ষকেরা সেনাবাহিনীর গুলির ভয় না করে রাজপথে নেমেছে, প্রানের ভয় যারা করেনি তারা বেতন বন্ধ বা টাকা কমানোর হুমকিতে ভয় পান , বলে মনে হয় কি?

সহকারী অধ্যাপক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছ থেকে এমন অবিবেচক বক্তব্য হতাশাজনক। রাজনৈতিক হাতিয়ার ও ক্ষমতা আজ সবার চোখে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আপনি ভূলে গেছেন অসির চেয়ে মসি বড়। আমরা 65 বছরের চাকরি চাই না। সম্মান নিয়ে বাচতে চাই। আপনার চোখ আজ অন্ধ। তুলনা আপনি করেন। আপনি সারা বিশ্ব ঘুরে দেখেন। এমন অবিবেচক বক্তব্য আর কজন প্রধান মন্ত্রী করেছেন। আমাদের বেতন চাই না। সম্মান চাই। পারবেন ফিরিয়ে দিতে। মনে রাখবেন অপমানের চেয়ে মৃত্যু শ্রেয়। কাল অথবা পরশু হয়ত শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যাবে। তবে সেখানে তাঁরা তাদের আগের রূপে হয়তো যেতে পারবেন না। মৃত মন নিয়ে তাঁরা তাদের কাজ পরিচালনা করবে। আপনি এবং আপনার সরকার শিক্ষকদের যে চড় দিয়েছেন, তা ভোলার নয়। দেশ এগিয়ে যাবে একথা সত্য। তবে আমার বিশ্বাস, ভবিষ্যত প্রজন্ম এ দিনটিকে শিক্ষকদের মর্যাদা হত্যা দিবস হিসেবে পালন করবে।

সহকারী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

৬৫ বছর চাকুরী করে আমরা কত সম্পদের মালিক হই আর সচিবরা ৫৯ বছর চাকুরী করে কতটুকু সম্পদের মালিক হয় এই স্টাডি টা হোক......
সহকারী অধ্যাপক, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ভীষণ ভয় হয়!! ভবিষ্যৎ বিশ্ববিদ্যালয় এবংএর শিক্ষকদের পরিণতি চিন্তা করে।
-------------------------------------------------------------------------------
সে দিন আর বেশি দুরে নয়, যেদিন সরকারি কর্মকর্তারা স্কুল-কলেজ এর মত বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষকদের শাসন করবে ( দুঃখিত এর চেয়ে ভাল কোনো শব্দ পেলাম না ) !!! ভবিষ্যৎ কজন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী এ পেশায় আস্তে চাইবে তা ভবিষ্যৎ-ই বলবে, তবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে বিশ্ব শব্দ টি চলে গিয়ে শুধু "বিদ্যালয়" অবশিষ্ট থাকবে এ কথা হলপ করে বলতে পারি। তাতে দেশের শিক্ষা-ব্যবস্থা যত রসাতলেই যাক না কেন, দেশের জনগণের অ-নে-ক টাকাতো সাশ্রয় হবে ( স্বতন্ত্র পে- স্কেল হলেতো কিছু যে টাকা বারতি দিতে হবে), যা দিয়ে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণতি করা হবে!!!!!!!

সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আমি যে বিষয়টি ভেবে গর্বিত-তৃপ্ত মনে গোটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারবো বলে মনে করি তা হলো, আমি এক শিক্ষক পরিবারের সদস্য। আমার বাবা ছিলেন শিক্ষক, মা ছিলেন শিক্ষক, আমার নানা, মামা, ফুফা আরো অনেকেই। কম আয়ের শিক্ষক পরিবারের চালচলন কোনদিন অর্থের চাকচিক্যে অন্যকে ম্লান করেনি। অন্তরের সম্পদে বিত্তবান এসব শিক্ষকের প্রতি সমাজে ছিল শ্রদ্ধা । আমাদেরকে শেখানো হত সমাজের যে কোন একজন শিক্ষককে দেখলে কি করে শ্রদ্ধাপ্রকাশ করতে হবে। শৈশব হতে এ্ইসব দেখেশুনে শিক্ষকহবার স্বপ্ন দেখতাম।
কিন্তু আজ আমি শিক্ষক হওয়ায় লজ্জিত - অপমানিত- ভীষণভাবে ভঙ্গুর।
বিষয়টি অর্থ-র নয় বিষয়টি শিক্ষকসমাজকে সমাজের প্রথম সারির নাগরিক হতে সরিয়ে দেবার বিষয়টি।
নিশ্চয়ই একথা কেউ অস্বীকার করবেন না যে সমাজ শিক্ষকদেরকে কোনদিন সঠিক সম্মানী দেয়নি। তবু লোকে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিয়েছে। শুধু মাত্র সম্মানে জীবনযাপন করার আশায়। আজ তাও দিতে নারাজ সমাজ।
(বারবার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পড়ানোকে দোষারোপ করার আগে দয়া করে জেনে নিবেন কতগুলি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কতজন শিক্ষক একাজে আছেন।)

এরপর আর কি আমাদের মত শিক্ষকরা সন্তানদের উৎসাহিত করতে পারবো শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নেবার জন্য? যদি না পারি তবে সমাজের একজন হিসেবে আমাদের দিকে অঙ্গুলী তুলে দোষ দেবার আগে ভাবুন আপনি আপনার শিক্ষকদের জন্য কি করেছেন? কেন আজ বিদেশে পড়তে চলে যাওয়া দেশত্যাগী শিক্ষকরা বিশ্বনন্দিত হলে আপনি বাংলাদেশী হিসেবে গর্ববোধ করেন অথচ তার মত সতীর্থ অনেক শিক্ষক বিদেশের সুযোগসুবিধার মায়া ত্যাগ করে দেশে ফিরে এলে তার বিদেশের অর্জিত জ্ঞানকে দেশে প্রয়োগ করার সুযোগ তৈরীতে আপনি দেশের শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে কি করেছেন?
Md Atiqur Rahman Ahad
Professor, University of Dhaka

Sunday early morn: went to the dept. from 8:30am class. Back home at 5:45pm [just had lunch, could not manage time for a cup of tea] - busy day. 
~9pm: I watched a video clip on univ. teachers. I felt speechless n staring at the window. Ruba asked me - what happened. No reply. After a while, I dropped myself to the floor - felt veeeery empty n frustrated n was talking to myself... 
Not sure what happened next - I woke up after ~10 hrs in the morning today - on the floor - without any pillow [luckily, I found a MickeyMouse doll under my head]. I was soooooooooooo upset n till now, feeling saaaaad. 
I chose to work at DU n worked soooooooooooo hard to score the top so that I could make sure that I can be a teacher at DU. I went to Australia - could move to NZ or USA or Canada for PhD - but returned n joined here. Left for PhD - returned; left for JSPS postdoc fellowship - returned in a situation when one should not. I was inhuman to leave my few months-old Rumaisa n PhD-student Ruba in a place of almost no support. Luckily, Kenji san, Matsuoka sensei & Washim vai were great to be supportive to her. I left when I had offers to work there. My Supervisor surprisingly retorted when I declined instantly '... why do u want to return - whereas nobody returns?' - he gave examples of all the BD students he knew [all examples - no return to BD]. He tried to convince me through the situation of my new-born daughter of few weeks n my wife [who was in PhD study]. I said no. Then he told me to discuss with my wife, then to arrange a meeting with him. I was adamant to return. Talked to Sukhan Zahid Parvez vai for his advice though but I was negative. My wife was so upset on me that she angrily told Rumaisa once that - see, ur father is returning to BD - to be the President of BD!!! 
I did not make any meeting - then my Supervisor asked me for a meeting n he asked me what I decided. I was blind. I was blind twice in my life - one for someone & had a real bad state in life; and another for DU. 
My sincere reply to him: 'see Sensei! After 2nd World War, many Japanese left Japan to overseas for higher studies n training n they returned n built this beautiful Japan today. I dream to be part of the development of BD, n what I learnt from Japan and from you - I want to give my best try at DU n contribute.' 
Truly that was my dream n great great hope. He, with loving gesture, wished me the best n told me whenever u feel to return, inform me. I thanked him. I had 2 more good scopes [as I had good connections mainly].

Mohammad M Islam
শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Today after watching the honorable prime minister's meet the press , it seems to me that we aren't the owner of country , just tenants. So we live on her kind charity and donation.
The way the prime minister spoke and her expression and tone toward the teacher community are very disgraceful, shocking and autocratic.

Many days ago I tried to say that as a teacher, we aren't important instrument to help keep the government in power. The government only takes care of those who help keep the government in power.

Md. Momin Uddin
মোঃ মমিন উদ্দিন, সহযোগী অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

মাষ্টারগো কেউ দাম দেয় না্। ভাবতাছি, মাষ্টারি ছাইড়া দিয়া কবি হমু।তো ছাড়নের আগে মাষ্টারগো নিয়া একখানা কবিতা লেইখা যায়।

Teacher

Greedy, unruly, ungrateful teachers;
The more you get the more you want.
Ignorant, backdated, old-fashioned fools;
Ye go on teaching false lessons for thy own benefit:
"Education is the backbone of a nation", or,
"Teachers are the architects of a nations", or,
"The pen is mightier than the sword", or,
"Knowledge is power" -- false are these now.
Ye fools should know: gone are the days when they had value; 
Gone are the days when you were great. 

No comments:

Post a Comment